
স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, হত্যাসহ নানা অপরাধের অভিযোগ অভিযুক্ত ডাকাত হাকিমের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তারা তুলে নিয়ে গেছে স্থানীয় তিন বাংলাদেশি কৃষককে। মুক্তিপণ না পেয়ে এদের একজনকে হত্যা ও অপর দুজনের বাড়িতে মুক্তিপণ চেয়ে না দিলে হত্যার হুমকি পাঠিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা। এদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ অফিসার ইনর্চাজ প্রদীপ দাশের নেতৃত্বে কয়েক টি দলে ভাগ হয়ে এ অভিযান চলমান রয়েছে ।
এতে অংশগ্রহন করছেন পুলিশ ছাড়াও স্থানীয় যুবকরা কিন্তু ডাকাত হাকিমের র্সোস নিয়োজিত বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিংগা দের ও স্থানীয় দের মাধ্যেমে তথ্য ফাঁস হওয়ার কারনে গভীর পাহাড়ে ডাকাত দলের সৃষ্ট আকঁড়ায় গিয়ে ও কারো দেখা মিলেনি।
পুরো পাহাড়ী এলাকা ডাকাত হাকিমের আয়ত্তে, যাতায়াতের রাস্তা একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সার্বক্ষনিক মোবাইল নেটওয়াকিংই তার একমাত্র মাধ্যম যাতে রয়েছে প্রতিটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পাহাড় পাশ্ববর্তী এলাকায় ও তার বিশ্বস্থ লোক।
, স্থানীয় আক্তার উল্লাহ (২৪) নামে এক কৃষককে সম্প্রতি অপহরণের পর গুলি করে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা ডাকাতরা এমন অভিযোগ করেছে তার পরিবার। একই এলাকার শাহ মোহাম্মদ শাহেদ (২৫), মোহাম্মদ ইদ্রিস (২৭) নামে আরও দুই কৃষককে তুলে নিয়ে গেছে তারা। কৃষক আক্তার উল্লাহ স্থানীয় মিনাবাজার এলাকার মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে। তার পরিবারের দাবি, সম্প্রতি আক্তার উল্লাহকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে রোহিঙ্গা ডাকাতরা।
পুলিশ পরের দিন ভোর ৬ টা থেকে পুরো দিন অভিযান চালালে ক্ষিপ্ত হয় ডাকাত দল এবং মুক্তিপণের টাকা চেয়ে না পাওয়ায় গত শুক্রবার ভোরে আক্তার উল্লাহকে গুলি করে হত্যার পর, তার লাশ টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উনছিপ্রাং পুটিবনিয়া নামক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে রাখা হয়েছে পরিবারের কাছে এমন খবরও পৌঁছে দিয়েছে ডাকাতরা। দাবি করা টাকা না দেওয়ায় অপহৃত বাকি দুইজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে তাদের পরিবারসহ স্থানীয়রা ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে ডাকাতদলের দ্বারা অপহরণের ঘটনার খবর স্থোনীয় পুলিশ অবগত হওয়ার পর থেকে তাদের উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। রবিবার (৩ মে) দিনভর এ অভিযান শুরু করে রাত্রে পযর্ন্ত বিভিন্ন অভিযান শেষে আজকে সকালে পাহাড় থেকে নেমে আসে পুলিশ দল। তবে অভিযান চলবে কখন কিভাবে তা না বলে অপহ্তদের জীবিত ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের অভিযান চলমান বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।
স্থানীয় অনেকে পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করেন, এই অভিযানের পুলিশের সাথে থাকা কয়েকজন যুবক জানান এইভাবে পাহাড়ি ডাকাতদের নির্মূল করা সম্ভব না। তাদের সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে হলে সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে যৌধ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। কেননা এই অঞ্চলে পাহাড়গুলো উচুঁ-নিচু সেখানে দ্রুত গতিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীদের অভিযান পরিচালনা করা খুবই কঠিন। তাছাড়া পাহাড়ের আশপাশে তাদের ব্যাপক সোর্স রয়েছে। তাই অভিযান পরিচালনা করার আগেই তাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়। ফলে দ্রুত তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলে।
কিভাবে উথান রোহিঙ্গা ডাকাত হাকিমের –
মায়ানমারের রাশিদং থানার বড়ছড়া গ্রামের জানি আলীর ছেলে আবদুল হাকিম। ২০১৫ সালে ১৩ জুন টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লানপাড়ার বাসিন্দা ও পুলিশের তথ্যদাতা (সোর্স) মোহাম্মদ সেলিম ও ওরফে মুন্ডি সেলিমকে কুপিয়ে হত্যার পর প্রথম আলোচনায় আসে এই ডাকাত সর্দার। এরপর ২০১৬ সালে ৪ জুলাই টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে (৬৫) গুলি করে হত্যার ঘটনায় হাকিমের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা হাকিম ডাকাত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে টেকনাফের ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ে ডাকাতি, খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন আবদুল হাকিম।
সার্বক্ষনিক পুলিশের সাহায্যেই থাকা কমিউনিটি পুলিশিং হোয়াইক্যং ইউনিয়ন সভাপতি হারুন সিকদার জানান ওসি প্রদিপের অভিযান খুব দ্রুত সফলতার দেখা মিলবে, এতে সর্বস্তরের জনসাধারনকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদানে দেশ ও জাতির র্স্বাথে কুখ্যাত রোহিংগা ডাকাত হাকিম বাহিনীর প্রধান হাকিম সহ সকল ডাকাতদের ধরতে ঐক্যবদ্ধভাবে পুলিশের পাশে থাকার অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলছে। ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চলে কোনও অপরাধীর ঠাঁই হবে না। বিশেষ করে পাহাড়ি ডাকাতদের ধরার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’টেকনাফ টুডে
পাঠকের মতামত